দাঁতের যত্ন নিতে যা করবেন জেনে রাখুন-সুস্থ থাকুন-What to do to take care of your teeth
মুখের স্বাস্থ্য সার্বিক স্বাস্থ্যের ওপর শক্ত প্রভাব ফেলে। গবেষণা বলছে, মুখের মধ্যে যেকোনো রোগ (দাঁতে গর্ত, মাড়ি রোগ বা ক্ষত) পুষে রাখলে বা সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। তাই কিছু বিষয় মেনে চললে দাঁতের এসব রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
মুখ পরিষ্কার: নিয়ম মেনে নিয়মিত দাঁতের সব পৃষ্ঠ ভালো মানের নরম টুথব্রাশ ও ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। যাঁদের দাঁতের ফাঁকে খাবার আটকে থাকে, তাঁদের ডেন্টাল ফ্লস বা ইন্টার ডেন্টাল ব্রাশে অভ্যস্ত হতে হবে। দাঁতের ভেতরের পৃষ্ঠে পাথর এবং চর্বণে ব্যবহৃত পৃষ্ঠ ও দুই দাঁতের মধ্যবর্তী পৃষ্ঠে ক্ষয় বেশি হয়। কারণ, এসব স্থান পর্যাপ্ত পরিষ্কার হয় না। আঙুল বা ব্রাশ দিয়ে জিব পরিষ্কার ও মাড়িতে আলতোভাবে ম্যাসাজ করা জরুরি। রাতে ঘুমানোর আগে দাঁত ব্রাশ করা জরুরি। শক্ত ব্রাশ দিয়ে দাঁত মাজা, কয়লা–ছাই ব্যবহার, দু–তিন মিনিটের অধিক সময় বা বারবার দাঁত ব্রাশ, চার মাসের অধিক সময় এক ব্রাশ ব্যবহার ও একজনের ব্যবহৃত ব্রাশ অন্যজন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
খাদ্যাভ্যাস: মুখের জন্য উপকারী সুষম আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে। ফরমালিনমুক্ত তাজা ফলমূল, শাকসবজি, সামুদ্রিক মাছ, ছোট মাছ, টক দই, চিজ, চিনিমুক্ত চুইংগাম, পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। মূলত ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি–ডি–ই, জিংক, অ্যান্টি–অক্সিডেন্টযুক্ত খাবার মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। মাতৃদুগ্ধ শিশুর মুখের স্বাস্থ্য রক্ষায় সর্বোচ্চ মানসিক–শারীরিক বিকাশসহ এলোমেলো দাঁত প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাদ্য মুখের স্বাস্থ্যকে যেমন হুমকিতে ফেলে, তেমনি রোগ প্রতিরোধক্ষমতা হ্রাস করে। ছোটবেলা থেকে চিনির প্রতি দুর্বলতা কমাতে শিশুদের উৎসাহিত করতে হবে। ধূমপান, জর্দা, গুল ও মদ স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক। অতিরিক্ত টকজাতীয় খাবার, যেমন লেবু, তেঁতুল, ক্যান্ডি দাঁতের সংস্পর্শে যত কম রাখা যায়, ততই ভালো।
মাউথওয়াশ ব্যবহার: যাঁদের ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, কিডনি রোগ, ক্যানসারের মতো ক্রনিক রোগ আছে, তাঁদের চিকিৎসকের পরামর্শে মাউথওয়াশ ব্যবহার করা জরুরি। ব্যস্ততায় মুখ পরিষ্কারে অবহেলা থাকলেও মাউথওয়াশ ব্যবহার করতে হবে। তবে দীর্ঘদিন মাউথওয়াশ ব্যবহারে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
চিকিৎসকের পরামর্শ: সমস্যা না হলেও বছরে অন্তত একবার অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। মুখের অনেক রোগ শুরুতে বোঝা যায় না, নিয়মিত চেকআপে শনাক্ত হলে তার চিকিৎসা করা সহজ হয়। চিকিৎসক নির্বাচনে দায়িত্বশীল হতে হবে।
লেখা:ডা. মো. আসাফুজ্জোহা রাজ, রাজ ডেন্টাল সেন্টার, ঢাকা