Site icon Media Plant

শরীরে পানি জমার কারণ ও প্রতিকার (Causes and remedies for body water)

হঠাৎ করেই শরীর ফুলে ঢোল হয়ে গেছে। হাত-পায়ে পানি আসাতেই এমন হতে পারে। আসলে শরীরে পানি আসার কারণেই শরীর ফুলে যায়। আর শরীরে পানি জমার অনেক কারণ থাকতে পারে। তবে পানি আসলে সেটা নিয়ে বসে থেকে হেলাফেলা করা যাবে না। কারণ অনেক বড় রোগের লক্ষণ হতে পারে।

হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা
হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা কমে গেলে (Congestive Cardiac Failure), উচ্চ রক্ত চাপ, হার্টের রক্ত চলাচলের ব্যাঘাত, হৃদযন্ত্রর ভাল্বের সমস্যা হলে, হার্টের মাংসপেশির কার্যকারিতা কমে আসে ফলে পায়ে, পেটে, বুকে পানি আসে। এসব রোগীর বুকে ব্যথা, উচ্চ রক্ত চাপ, বুক ধড়ফড় করা, অতিরিক্ত ক্লান্তবোধ, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি লক্ষণ থাকে।

লিভারের সমস্যা
লিভার সিরোসিস হলে প্রথমে পেটে ও পরে পায়ে ও বুকে পানি জমে যায়। হেপাটাইটিস ভাইরাস বি ও সি, অতিরিক্ত মদ্যপান, লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমে লিভারের সিরোসিস হয়। এসব রোগীর খাবারে অরুচি, হলুদ প্রস্রাব, রক্ত বমি ইত্যাদি লক্ষণ থাকে।

কিডনির সমস্যা
নেফ্রোটিক সিনড্রোম, নেফ্রাইটিস ও কিডনি বিকল হলে প্রথমে মুখে, পরে পায়ে ও বুকে পানি আসে। এসব রোগীর বেশী বেশী প্রস্রাব, বমি বমি লাগা, খাবারে অরুচি, প্রস্রাব ফেনা ফেনা, প্রস্রাবের রং ঘন সরিষার তেলের মত, কম প্রস্রাব হওয়া ইত্যাদি লক্ষণ থাকে।

আমিষের মাত্রা কমা
রক্তে আমিষের মাত্রা কমে গেলে, পরিমিত খাবার না খেলে, হজম না হলে, খাদ্য নালী থেকে আমিষ বের হয়ে গেলে অথবা কিডনি দিয়ে আমিষ বেরিয়ে গেলে, আমিষ শরীরে তৈরি না হলে রক্তে আমিষের মাত্রা কমে যায়। রক্তে আমিষ কমে গেলে পায়ে, পেটে ও বুকে পানি আসে।

থাইরয়েড হরমোনের সমস্যা
থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা শরীরে কমে গেলে পায়ে পানি আসে। এই রোগে রোগীর গলগণ্ড, শীত শীত লাগা, মোটা হয়ে যাওয়া, মাসিকের রক্ত বেশী যাওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া ইত্যাদি লক্ষণগুলো থাকে।

ওষুধের কারণে পা ফুলে যাওয়া
ব্যথার ওষুধ যেমন:ডাইক্লোফেনাক, ন্যাপরোক্সেন, আইবুপ্রোফেন, ইটোরিকক্সিব খেলে পায়ে পানি আসে। এছাড়া উচ্চ রক্ত চাপের ওষুধ ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকার (Calcium Channel Blocker) যেমন নিফেডিপিন, অ্যামলোডিপিন এসব ওষুধ খেলে পায়ে পানি আসতে পারে।

পায়ে পানি আসলে করণীয় :
পায়ে পানি আসলে রোগীকে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। রোগীর ইতিহাস, শারীরিক পর্যবেক্ষণ ও কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা যেমন CBC, Urine R/E, বুকের X-ray, ইসিজি, হরমোন, পেটের আলট্রাসনোগ্রাম, হার্টের ইকো-কার্ডিওগ্রাম ইত্যাদি করে পানি আসার কারণ নির্ণয় করা যায়। তবে রোগীর অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

বক্ষব্যাধি ও এ্যাজমা বিশেষজ্ঞ
ইউনাইটেড হাসপাতাল

Exit mobile version